মতিঝিল
শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয়া নেতাকর্মীদের ওপর সরকারি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের
প্রতিবাদে আগামী রবিবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে হেফাজতে
ইসলাম।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম হাটহাজারীর দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম
মাদ্রাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি নতুন এই কর্মসূচি ঘোষণা করে।
চট্টগ্রামভিত্তিক হেফাজতের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী এই মাদ্রাসার
মহাপরিচালক।
গত রবিবার ঢাকা অবরোধের পর মতিঝিলে অবস্থান নেয়া হেফাজতকর্মীদের সাঁড়াশি অভিযানে তুলে দেয়ার পর এটাই সংগঠনটির প্রথম কোনো কর্মসূচি।
সংবাদ সম্মেলন থেকে হেফাজতের নেতারা আগামীকাল বুধ ও পরের দিন বৃহস্পতিবার
বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী ১৮ দলীয় জোটের হরতালে সমর্থনের কথা জানান।
গত রবিবার গভীর রাতে হেফাজতকর্মীদের মতিঝিল থেকে হটাতে গিয়ে সংঘর্ষ হয়।
এতে সহস্রাধিক হতাহত হয়েছে দাবি করে এর প্রতিবাদে বুধ ও বৃহস্পতিবার হরতাল
ডাকে হেফাজতের কর্মসূচিতে সমর্থন দেয়া বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক
মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী ঢাকায় হেফাজতকর্মীদের ‘হত্যায়’ জড়িতদের
গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করেন।
তিনি এ সময় দাবি করেন, ‘রবিবার
গভীর রাতে সরকারি বাহিনী তাদের ৩ হাজার নেতাকর্মীকে গুলি করে হত্যা ও তাদের
লাশ গুম করেছে।’ মাওলানা আশরাফের ভাষায়, ‘ঘটনার রাতে প্রত্যক্ষ ও আহতদের
মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি ৩ হাজারের অধিক মানুষকে গুলি করে হত্যা এবং
তাদের লাশ গুম করা হয়েছে।’
তিনি এই হত্যার নিন্দা জানান এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তে করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
মাওলানা আশরাফ অভিযোগ করেন, গত রবিবার পল্টনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যে
হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে তার সঙ্গে হেফাজতের কর্মীরা কোনোভাবেই
জড়িত নন। সরকারি দলের ক্যাডার বাহিনী এই হামলা-ভাঙচুর এবং অগ্নি ও
লুটপাটের সঙ্গে জড়িত।’
তিনি হেফাজতের কেন্দ্রীয় মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরীসহ গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দাবি করেন।
রবিবার রাতে মতিঝিল থেকে হেফাজতের নেতাকর্মীকে উঠিয়ে দেয়ার পর সোমবার
বিকেলে পুলিশ পাহারায় চট্টগ্রামগামী বিমানে তুলে দেয়া হয় আল্লামা শাহ আহমদ
শফীকে। এরপর রাতেই জুনাইদ বাবুনগরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ মঙ্গলবার আদালতে
হাজির করে পুলিশ রিমান্ড চাইলে ৯ দিন মঞ্জুর করেন আদালত।
শফীকে
আটকের গুজবে সোমবার হাটহাজারীতে মাদ্রাসাছাত্র ও হেফাজতকর্মীরা ভাঙচুর শুরু
করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এতে নিহত হন অন্তত ৮ জন।
অন্যদিকে, মতিঝিল থেকে সরে হেফাজতকর্মীরা নারায়ণগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম
মহাসড়ক অবরোধ করলে সেখানে সংঘর্ষে নিহত হন অন্তত ২১ জন। এছাড়া বাগেরহাটেও
হেফাজতের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ২ জন নিহত হন।
এসব ঘটনায় একটি হত্যা মামলাসহ রাজধানী ঢাকায় ১২টি এবং নারায়ণগঞ্জে ৫ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন