BREAKING NEWS

বুধবার, ৮ মে, ২০১৩

হেফাজতের টার্গেট ছিল সচিবালয়ে হামলা, ব্যাংক লুট, শাপলা অভিযানে মারণাস্ত্র ব্যবহার হয়নি’

শাপলা অভিযানে মারণাস্ত্র ব্যবহার হয়নি

মতিঝিল শাপলা চত্বরে ৫ই মে’র অপারেশনের নাম ছিল ‘অপারেশন সিকিউরড শাপলা ওয়াচ’। আইন ভঙ্গ করে হেফাজতে ইসলাম অবস্থান নেয়ায়, নগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে প্রাণঘাতি কোন অস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি। এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে ঈর্ষনীয় ক্ষিপ্রতায়। হেফাজতের টার্গেট ছিল সচিবালয়ে হামলা এবং ব্যাংক লুট। ৫ই মে সকাল থেকে রাতে অভিযান পরিচালনা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ সকালে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য তুলে ধরেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ। ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি’র সম্মিলিত (কম্বাইন্ড) অপারেশন ছিল সেটি। জিরো ক্যজুয়ালিটি (কোন প্রাণহানী হবে না) ছিল অপারেশনের মোটিভ। মাত্র ১০ মিনিটের ঈর্ষনীয় ক্ষিপ্রতায় ওই অপারেশনে শাপলা চত্বরকে পরিষ্কার করা হয়। তিনি বলেন, অপারেশনে নিহতের ব্যপারে প্রচারিত সমস্ত তথ্য অসত্য। বিভিন্ন গুজব ছড়ানো হচ্ছে। দুই হাজার, তিন হাজার লোক নিহতের খবর ছড়ানো হচ্ছে। যা সত্য নয়। মিডিয়ার সামনে অপারেশন হয়েছে। ক্যামেরার চোখকে ফাঁকি দেয়া যায় না। দুইটি টিভি পুরো অপারেশনকে লাইভ সম্প্রচার করেছে। দিগন্ত টিভি ও ইসলামিক টিভি বন্ধ করে দিয়ে অপারেশন চালানো হয়েছে বলে যে কথা বলা হচ্ছে না সত্য নয়। দিগন্ত ও ইসলামিক টিভির ক্যামেরাও তখন স্পটে ছিল।
সাদ সম্মেলনে বিজিবি এবং র‌্যাবের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। শাপলা অভিযানে এ দুই বাহিনীও অংশ নেয়।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, হেফাজতে ইসলামকে সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে সমাবেশ শেষ করতে বলা হয়েছিল। তারা তা না করে রাতে ও অবস্থান নেয়। হেফাজতের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে লালবাগ থেকে সমাবেশ স্থলে নেয়ার বারবার চেষ্টা করা হয়। বারবার তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি নিরাপত্তার কথা বলে সেখানে যাননি। সন্ধ্যায় পুলিশের নিরাপত্তায়, পুলিশের গাড়িতে করে তাকে মতিঝিলে নেয়ার পথে পলাশী থেকে তিনি আবার ফিরে যান।
তিনি দাবি করেন, পুলিশ সদস্যদের পুড়িয়ে মারার জন্য হেফাজত কর্মীরা পুলিশ ক্যাম্পে বাইরে তালা দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে একজন পুলিশ সদস্য অগ্নিদগ্ধ হন। মতিঝিল ও পল্টন এলাকায় স্থাপিত পুলিশের ৬৯ টি সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে হেফাজতের কর্মীরা। তারা ৩০ লাখ টাকাও লুট করে। বায়তুল মোকাররম মসজিদ এবং সোনার মার্কেট আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
শাপলা অভিযানের মৃত্যুর বিষয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অভিযানে যেসব অস্ত্র ও উপকরণ ব্যবহার হয়েছে তা মারণাস্ত্র নয়। এগুলো প্রাণঘাতী নয়। যে কোন ধরনের বিক্ষোভ দমনে সারা বিশ্বে এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার হয়ে থাকে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ফটোশপের মাধ্যমে অনেক ছবি তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। ওই এলাকায় অভিযান শেষে হেফাজতের মঞ্চের কাছ থেকে চার জানের লাশ কাপড় ও পলিথিন দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় পাওয়া যায়। ওই এলাকায় আরও তিন জনের লাশ পরে পাওয়া যায়। ওই দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ মোট ১১ জনের লাশ পাওয়া যায় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
হেফাজতের বহু হতাহতের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, তারা এ তালিকা কোথায় পেলেন? তাদের কাছে যদি এ ধরনের কোন তালিকা থাকে তাহলে তা প্রকাশ করেন না কেন? তিনি বলেন, সাভারে যারা মারা গেছেন এবং নিখোঁজ তাদের স্বজনরা সেখানে ভিড় করছেন। এখানে হতাহতের ঘটনা ঘটলে তাদের স্বজনরাওতো এভাবে সন্ধান করতেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন