BREAKING NEWS

বুধবার, ৮ মে, ২০১৩

যেভাবে চট্টগ্রামে পাঠানো হয় আল্লামা শফীকে

অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে এসে শাপলা চত্বরে ক্র্যাকডাউনের পর নিজেই অবরুদ্ধ ছিলেন হেফাজতের আমীর  
আল্লাম শাহ আহমদ শফী। সোমবার দুপুর পর্যন্ত তিনি হেফাজতের লালবাগস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে ছিলেন। পুলিশ সকাল থেকে ওই কার্যালয়টি ঘেরাও করে রেখেছিল। সেখানে একটি কক্ষে আল্লামা শফী অবস্থান করছিলেন। দুপুরে পুলিশের একটি দল তাকে একটি গাড়িতে করে বিমানবন্দরে নিয়ে যায়। সেখান থেকে বিকালে একটি বেসরকারি এয়ারলাইন্সের বিমানে তিনি চট্টগ্রাম চলে যান। ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আল্লামা শফী নিজ উদ্যোগেই চট্টগ্রাম চলে গেছেন।
এদিকে ঢাকা ছাড়ার আগে হেফাজতের মধ্যম সারির নেতা আলতাফ হোসেনের মাধ্যমে একটি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেশবাসীকে জানিয়ে গেলেন আল্লামা শফী। পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতেই তার বক্তব্যের কপি তৈরি করা হয়। এতে বলা হয়েছে, আজ দোয়া দিবস পালন করতে হবে। চট্টগ্রাম যাত্রার আগে লালবাগ মাদরাসায় তার বক্তব্যটুকু পড়ে শোনানো হয়। তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কোন কথা বলেননি।
ভোর থেকে গণমাধ্যম কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন লালবাগ মাদরাসায়। আগের রাতেই জানা গিয়েছিল হেফাজত প্রধান আল্লামা শফী আছেন সেখানে। তাকে মতিঝিলের সমাবেশে আসতে দেয়া হয়নি নিরাপত্তার কারণে। পলাশী থেকে ফিরিয়ে নেয়া হয় লালবাগ মাদরাসায়। রাতে তিনি সেখানেই ছিলেন। সকালে গুজব ছড়িয়ে পড়ে আল্লামা শফীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গণমাধ্যমকর্মীরা উপচে পড়ে লালবাগে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় রণপ্রস্তুতি। মাদরাসার বাইরে সারি সারি পুলিশ। ভেতরে অসংখ্য গোয়েন্দা পুলিশ। গণমাধ্যম কর্মীরা অপেক্ষা করতে থাকেন। হেফাজতের মধ্যম সারির কয়েকজন নেতা জানান, হুজুর কথা বলবেন। কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পরও তিনি কক্ষের বাইরে না আসায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায় তার কক্ষের ভেতর অপেক্ষা করছেন পুলিশের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তারা তার সঙ্গে একান্তে কথা বলছেন। একপর্যায়ে হেফাজত কর্মীরাই অধৈর্য হয়ে দরজা খুলতে বললেও ভেতর থেকে দরজা খোলা হয়নি। দরজা খোলা নিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তা সামাল দিতে বাইরে থেকে ছুটে আসেন প্রায় ৫০ গোয়েন্দা পুলিশ। এভাবে বাইরে উত্তেজনার মধ্যেই গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল, লালবাগের ডিসি হারুনার রশিদের নেতৃত্বে বাইরে বের করে নিয়ে আসেন আল্লামা শফীকে। সরাসরি তাকে একটি মাইক্রোবাসে তোলা হয়। তার আগে আল্লামা শফীর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য পড়ে শোনান হেফাজত নেতা আলতাফ হোসেন। ওই সময় পুলিশ আল্লামা শফীকে গণমাধ্যমের সঙ্গে কোন কথা বলতে দেয়নি। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন তার ছেলে আনাস মাদানী, হেফাজত নেতা জুনায়েদ বাবুনগরী এবং তার ব্যক্তিগত সহকারী সফিউল আলম। কড়া পুলিশি প্রহরায় আল্লামা শফীকে নিয়ে যাওয়া হয় বিমানবন্দরে, সেখান থেকে তুলে দেয়া হয় চট্টগ্রামের বিমানে। আল্লামা শফীকে লালবাগ মাদরাসা থেকে গাড়িতে ওঠানোর সময় মাদরাসার কয়েক শ’ ছাত্রকে কাঁদতে দেখা যায়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন