BREAKING NEWS

বুধবার, ৮ মে, ২০১৩

যেভাবে চট্টগ্রামে পাঠানো হয় আল্লামা শফীকে

অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে এসে শাপলা চত্বরে ক্র্যাকডাউনের পর নিজেই অবরুদ্ধ ছিলেন হেফাজতের আমীর  
আল্লাম শাহ আহমদ শফী। সোমবার দুপুর পর্যন্ত তিনি হেফাজতের লালবাগস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে ছিলেন। পুলিশ সকাল থেকে ওই কার্যালয়টি ঘেরাও করে রেখেছিল। সেখানে একটি কক্ষে আল্লামা শফী অবস্থান করছিলেন। দুপুরে পুলিশের একটি দল তাকে একটি গাড়িতে করে বিমানবন্দরে নিয়ে যায়। সেখান থেকে বিকালে একটি বেসরকারি এয়ারলাইন্সের বিমানে তিনি চট্টগ্রাম চলে যান। ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আল্লামা শফী নিজ উদ্যোগেই চট্টগ্রাম চলে গেছেন।
এদিকে ঢাকা ছাড়ার আগে হেফাজতের মধ্যম সারির নেতা আলতাফ হোসেনের মাধ্যমে একটি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেশবাসীকে জানিয়ে গেলেন আল্লামা শফী। পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতেই তার বক্তব্যের কপি তৈরি করা হয়। এতে বলা হয়েছে, আজ দোয়া দিবস পালন করতে হবে। চট্টগ্রাম যাত্রার আগে লালবাগ মাদরাসায় তার বক্তব্যটুকু পড়ে শোনানো হয়। তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কোন কথা বলেননি।
ভোর থেকে গণমাধ্যম কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন লালবাগ মাদরাসায়। আগের রাতেই জানা গিয়েছিল হেফাজত প্রধান আল্লামা শফী আছেন সেখানে। তাকে মতিঝিলের সমাবেশে আসতে দেয়া হয়নি নিরাপত্তার কারণে। পলাশী থেকে ফিরিয়ে নেয়া হয় লালবাগ মাদরাসায়। রাতে তিনি সেখানেই ছিলেন। সকালে গুজব ছড়িয়ে পড়ে আল্লামা শফীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গণমাধ্যমকর্মীরা উপচে পড়ে লালবাগে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় রণপ্রস্তুতি। মাদরাসার বাইরে সারি সারি পুলিশ। ভেতরে অসংখ্য গোয়েন্দা পুলিশ। গণমাধ্যম কর্মীরা অপেক্ষা করতে থাকেন। হেফাজতের মধ্যম সারির কয়েকজন নেতা জানান, হুজুর কথা বলবেন। কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পরও তিনি কক্ষের বাইরে না আসায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায় তার কক্ষের ভেতর অপেক্ষা করছেন পুলিশের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তারা তার সঙ্গে একান্তে কথা বলছেন। একপর্যায়ে হেফাজত কর্মীরাই অধৈর্য হয়ে দরজা খুলতে বললেও ভেতর থেকে দরজা খোলা হয়নি। দরজা খোলা নিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তা সামাল দিতে বাইরে থেকে ছুটে আসেন প্রায় ৫০ গোয়েন্দা পুলিশ। এভাবে বাইরে উত্তেজনার মধ্যেই গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল, লালবাগের ডিসি হারুনার রশিদের নেতৃত্বে বাইরে বের করে নিয়ে আসেন আল্লামা শফীকে। সরাসরি তাকে একটি মাইক্রোবাসে তোলা হয়। তার আগে আল্লামা শফীর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য পড়ে শোনান হেফাজত নেতা আলতাফ হোসেন। ওই সময় পুলিশ আল্লামা শফীকে গণমাধ্যমের সঙ্গে কোন কথা বলতে দেয়নি। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন তার ছেলে আনাস মাদানী, হেফাজত নেতা জুনায়েদ বাবুনগরী এবং তার ব্যক্তিগত সহকারী সফিউল আলম। কড়া পুলিশি প্রহরায় আল্লামা শফীকে নিয়ে যাওয়া হয় বিমানবন্দরে, সেখান থেকে তুলে দেয়া হয় চট্টগ্রামের বিমানে। আল্লামা শফীকে লালবাগ মাদরাসা থেকে গাড়িতে ওঠানোর সময় মাদরাসার কয়েক শ’ ছাত্রকে কাঁদতে দেখা যায়।

হেফাজতের টার্গেট ছিল সচিবালয়ে হামলা, ব্যাংক লুট, শাপলা অভিযানে মারণাস্ত্র ব্যবহার হয়নি’

শাপলা অভিযানে মারণাস্ত্র ব্যবহার হয়নি

মতিঝিল শাপলা চত্বরে ৫ই মে’র অপারেশনের নাম ছিল ‘অপারেশন সিকিউরড শাপলা ওয়াচ’। আইন ভঙ্গ করে হেফাজতে ইসলাম অবস্থান নেয়ায়, নগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে প্রাণঘাতি কোন অস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি। এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে ঈর্ষনীয় ক্ষিপ্রতায়। হেফাজতের টার্গেট ছিল সচিবালয়ে হামলা এবং ব্যাংক লুট। ৫ই মে সকাল থেকে রাতে অভিযান পরিচালনা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ সকালে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য তুলে ধরেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ। ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি’র সম্মিলিত (কম্বাইন্ড) অপারেশন ছিল সেটি। জিরো ক্যজুয়ালিটি (কোন প্রাণহানী হবে না) ছিল অপারেশনের মোটিভ। মাত্র ১০ মিনিটের ঈর্ষনীয় ক্ষিপ্রতায় ওই অপারেশনে শাপলা চত্বরকে পরিষ্কার করা হয়। তিনি বলেন, অপারেশনে নিহতের ব্যপারে প্রচারিত সমস্ত তথ্য অসত্য। বিভিন্ন গুজব ছড়ানো হচ্ছে। দুই হাজার, তিন হাজার লোক নিহতের খবর ছড়ানো হচ্ছে। যা সত্য নয়। মিডিয়ার সামনে অপারেশন হয়েছে। ক্যামেরার চোখকে ফাঁকি দেয়া যায় না। দুইটি টিভি পুরো অপারেশনকে লাইভ সম্প্রচার করেছে। দিগন্ত টিভি ও ইসলামিক টিভি বন্ধ করে দিয়ে অপারেশন চালানো হয়েছে বলে যে কথা বলা হচ্ছে না সত্য নয়। দিগন্ত ও ইসলামিক টিভির ক্যামেরাও তখন স্পটে ছিল।
সাদ সম্মেলনে বিজিবি এবং র‌্যাবের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। শাপলা অভিযানে এ দুই বাহিনীও অংশ নেয়।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, হেফাজতে ইসলামকে সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে সমাবেশ শেষ করতে বলা হয়েছিল। তারা তা না করে রাতে ও অবস্থান নেয়। হেফাজতের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে লালবাগ থেকে সমাবেশ স্থলে নেয়ার বারবার চেষ্টা করা হয়। বারবার তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি নিরাপত্তার কথা বলে সেখানে যাননি। সন্ধ্যায় পুলিশের নিরাপত্তায়, পুলিশের গাড়িতে করে তাকে মতিঝিলে নেয়ার পথে পলাশী থেকে তিনি আবার ফিরে যান।
তিনি দাবি করেন, পুলিশ সদস্যদের পুড়িয়ে মারার জন্য হেফাজত কর্মীরা পুলিশ ক্যাম্পে বাইরে তালা দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে একজন পুলিশ সদস্য অগ্নিদগ্ধ হন। মতিঝিল ও পল্টন এলাকায় স্থাপিত পুলিশের ৬৯ টি সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে হেফাজতের কর্মীরা। তারা ৩০ লাখ টাকাও লুট করে। বায়তুল মোকাররম মসজিদ এবং সোনার মার্কেট আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
শাপলা অভিযানের মৃত্যুর বিষয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অভিযানে যেসব অস্ত্র ও উপকরণ ব্যবহার হয়েছে তা মারণাস্ত্র নয়। এগুলো প্রাণঘাতী নয়। যে কোন ধরনের বিক্ষোভ দমনে সারা বিশ্বে এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার হয়ে থাকে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ফটোশপের মাধ্যমে অনেক ছবি তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। ওই এলাকায় অভিযান শেষে হেফাজতের মঞ্চের কাছ থেকে চার জানের লাশ কাপড় ও পলিথিন দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় পাওয়া যায়। ওই এলাকায় আরও তিন জনের লাশ পরে পাওয়া যায়। ওই দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ মোট ১১ জনের লাশ পাওয়া যায় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
হেফাজতের বহু হতাহতের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, তারা এ তালিকা কোথায় পেলেন? তাদের কাছে যদি এ ধরনের কোন তালিকা থাকে তাহলে তা প্রকাশ করেন না কেন? তিনি বলেন, সাভারে যারা মারা গেছেন এবং নিখোঁজ তাদের স্বজনরা সেখানে ভিড় করছেন। এখানে হতাহতের ঘটনা ঘটলে তাদের স্বজনরাওতো এভাবে সন্ধান করতেন।

শহীদ আনোয়ার জাহিদের জানাযা সম্পন্ন ...


হাজারো হাজারো মুসল্লি , হেফাজতনেতাকর্মি এবং আলেম ওলামা ও মাদ্রাসা ছাত্রসহ সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতির মধ্যদিয়ে সমাপ্ত হলো শহীদ আনোয়ার জাহিদের জানাযা । আজ দুপুর ২-৩০ টায় সিলেট নগরস্থ হুমায়ুন রশীদ চত্বরের নিকটস্থ পাঠানপাড়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় এ জানাযা । হেফাজতের নেতারা আলিয়া ময়দানে জানাযার কথা বললেও পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি । জানাযায় শরীক হন সিলেট জেলা হেফাজতের সভাপতি শায়খুল মুহিব্বুল হক গাছবাড়ি , রেঙ্গা মাদ্রাসার মুহতামিম হেফাজতনেতা মাওলানা মুহিউল ইসলাম বুরহান , প্রিন্সিপাল মাওলানা মজদুদ্দিন আহমাদ , হেফাজতনেতা মাওলানা রেজাউল করিম জালালি , জামেয়া দারুল হুদার শায়খুল হাদীস মাওলানা খাইরুল ইসলাম বড়লেখি , হেফাজতনেতা মাওলানা মুসতাক আহমদ খান , গহরপুর মাদ্রাসার মুহতামিম হাফিজ মাওলানা মুসলেহুদ্দিন রাজু , দারুল হুদার শিক্ষাসচিব মাওলানা আবদুল মুকিত জালালাবাদি সহ দরগাহ মাদ্রাসা , রেঙ্গা মাদ্রাসা , কাজিরবাজার মাদ্রাসা , ভার্থখলা মাদ্রাসা , নয়াসড়ক মাদ্রাসা , দারুসসালাম মাদ্রাসা , দারুল হদা মাদ্রাসা , গহরপুর মাদ্রাসা , সুলতানপুর মাদ্রাসা সহ নগরের ভেতর , আশপাশ এবং দুর-দুরান্তের মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক গণ । নামাযের একঘন্টা পুর্ব পর্যন্ত তুমুল বৃষ্টি থাকলেও নামায চলাকালে কোনো বৃষ্টি ছিল না । দারুসসালাম মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি ওলিউর রহমান সাহেবের ইমামতির মধ্য দিয়ে শেষ হয় এ জানাযার নামায ।

যেতে হবে সমঝোতার পথে


হেফাজত বনাম সরকার এখন সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু। গভীর রাতে মতিঝিলে অবস্থান নেয়া লাখ লাখ হেফাজত কর্মীর ওপর বিজিবি-র‌্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযানের খবর মিডিয়ায় দেশ-বিদেশের তাবৎ খবরকে ছাপিয়ে গেছে। দেশের সবগুলো মিডিয়ায় এ খবর শিরোনাম হচ্ছে। বিশ্বের প্রভাবশালী মিডিয়াগুলোর খবরে বিরাট জায়গা দখল করে নিয়েছে শাপলা চত্বরের ঘটনা। ব্লগ, ফেসবুক, টুইটার, ওয়েব সাইট, ইমেইল, অনলাইন মিডিয়া, টেলিভিশনের টকশোর আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তু এখন হেফাজত এবং মতিঝিলের বর্বরতা। মত প্রকাশ বিতর্কের পাশাপাশি সামনে কি হয় সে আশঙ্কা থেকে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা প্রকাশ করছে মানুষ। একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও একজন সমাজবিজ্ঞানী মনে করেন সংলাপের মাধ্যমে সংকটের সুরাহা করা উচিত। তাদের মতে হেফাজত ইস্যুতে হামলা-মামলা, জুলুম-নির্যাতন, সংঘাত-সংঘর্ষ, দমন-পীড়নের পথ পরিহার করে সরকারকে সমঝোতার পথে হাঁটতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩ মে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, হেফাজতের ১৩ দফার অনেকগুলো দাবি মেনে নেয়া হয়েছে। কিছু প্রক্রিয়াধীনও রয়েছে। অনেক দাবি অযৌক্তিক হলেও মুসলমান হিসেবে অনেক দাবির সঙ্গে একমত। আগে হেফাজতের নেতার সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী একজন মন্ত্রীকেও পাঠিয়েছিলেন। তাহলে হেফাজত ইস্যুতে হঠাৎ সরকার কঠোর হলো কেন? কেনই বা গভীর রাতে ভয়ঙ্কর এ ঘটনার মাধ্যমে গোটা দেশে যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি করা হলো? অনেকেই বলছেন, ক্ষমতাসীন দলের ভিতরে থেকে রাজনীতির নামে ‘পলিটিক্স’ করছেন অতি প্রগতিবাদী ব্যক্তি। কিছু বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ, সাংস্কৃতিক নেতা ধর্মনিরপেক্ষতা গেল গেল বলে পরিস্থিতিকে উস্কে দিচ্ছেন। একজন প্রবীণ আইনজীবীর ‘সরকার এখনই হেফাজতকে মতিঝিল থেকে সরিয়ে দিচ্ছে না কেন?’ বক্তব্য দেয়ার কয়েক ঘন্টার পর যৌথ অভিযান শুরু হয়। বিশ্ব মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে সরকার। বেকায়দায় পড়ে যাওয়া বর্তমান সরকারকে ‘শুভবুদ্ধি’ দিয়ে পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ দেখাতে পারছে না কেউ। পরিস্থিতির সব দায় সরকারের ওপর যাচ্ছে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া সবখানেই হেফাজত ইস্যু নিয়ে আলোচনা সমালোচনা বিতর্ক হচ্ছে। হাটে-মাঠে-ঘাটে সবখানে মানুষের মধ্যে এক আলোচনা কি হবে সামনে। পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নিচ্ছে? ভয়, অনিশ্চয়তাও ক্রমান্বয়ে মানুষকে গ্রাস করছে। সভার ট্রাজেডির পর গার্মেন্টস শিল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। গার্মেন্টসে কর্মরত প্রায় অর্ধ কোটি শ্রমিকের জীবন-জীবিকা এখন হুমকির মুখে। বিদেশী বায়ারদের কাছে সরকারকে এনিয়ে জবাবদিহি করতে হচ্ছে। এ ছাড়াও শাহবাগমঞ্চ, হলমার্ক, ডেসটিনি, শেয়ারবাজার, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার, পদ্মা সেতু ইস্যু সরকারকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক ইস্যু নিয়ে বিরোধী দলের আন্দোলন চলছে। গভীর রাতে আলেমদের ওপর যৌথ অভিযানে ২/৩ হাজার মানুষের মৃত্যুর গুজব নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। বাংলা ভিতনের ফ্রন্ট লাইন আলোচনায় দ্যা নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। মতিঝিলের ট্রাজেডি (হাজার হাজার মৃত্যুর গুজব) নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, মৃত্যু নিয়ে এ গুজবের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এক. অপারেশনের সময় বেছে নেয়া হয়েছে শেষ রাতে। ওই সময় সব পত্রিকা ছাপা হয়ে যায়। আবার ঘটনার খবর প্রচার করায় দুটি টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনার কারণে মানুষ অসংখ্য মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে কথাবার্তা বলছে। রাতের আঁধারে হেফাজত কর্মীদের ওপর অভিযানের প্রতিবাদে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট দুই দিনের হরতাল কর্মসূচি দিয়েছে। হেফাজতে ইসলাম গতকাল দোয়া দিবস পালন করেছে। অথচ সংগঠনের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীকে গ্রেফতার করে ৯ দিনের রিমা-, ৪০ হেফাজত কর্মীকে ২ দিনের রিমা-, সংগঠনের আমির আল্লামা আহমদ শফীর বিরুদ্ধে আদালতে রীট এবং হেফাজত কর্মীদের ওপর দমন-পীড়নের প্রতিবাদে ১২ মে হরতাল কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। এসব ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচি পরিস্থিতিকে আরো সংঘাতময় করে তুলবে। হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি ঘিরে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ এবং বহু প্রাণহানির পরিপ্রেক্ষিতে সংঘাত বন্ধের আহবান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি এই আহ্বান জানানো হলো। বিবৃতিতে মহাসচিব বাংলাদেশের সব পক্ষকেই সংঘাত থেকে বিরত হওয়ার আহবান জানান। তিনি সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে নিজেদের মত প্রকাশ করার আহবান জানান। পাশাপাশি তিনি রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় নেতাদের ‘গঠনমূলক সংলাপ’র মাধ্যমে সমস্যার সমাধান এবং উত্তেজনা প্রশমনে পরস্পরকে সহযোগিতা করারও আহবান জানান।কওমী মাদ্রাসা কেন্দ্রিক গড়ে উঠা অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামকে প্রথম থেকেই শহুরে বুদ্ধিজীবী, সাংস্কৃতিক নেতা, সুশীল সমাজ, তথাকথিত প্রগতিশীল ব্যক্তি, মানবাধিকার রক্ষার ব্যাপারী এনজিওগুলো তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেছে। সমাজের পিছিয়ে পড়া আলেম সমাজকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছে। এমনকি অনেকেই মানুষের দান-খয়রাতে পরিচালিত হওয়ায় কওমী মাদ্রাসার শিক্ষক-ছাত্রদের ফকির-মিসকিনের সঙ্গে তুলনা করেছে। সরকারের ভিতরে একটি অংশও তথাকথিত প্রগতিশীল এবং বামপন্থীদের সঙ্গে সুর মেলালেও দূরদর্শী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেফাজতের অবস্থা এবং ধর্মীয় আবেগ বুঝতে পেরেছিলেন। তাই তিনি মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে আলোচনার জন্য পাঠিয়ে দেন আল্লামা আহমদ শফীর কাছে। ব্লগারদের কঠোর বিচারসহ ১৩ দফা দাবিতে হেফাজত আন্দোলন করলেও সরকার থেকে জানিয়ে দেয়া হয় বর্তমান সরকার ইসলাম বিদ্বেষীদের প্রশ্রয় দেবে না। হেফাজতের ১৩ দফা দাবির অনেকগুলো মেনে নেয়া হয়েছে। কয়েকটি দাবি নিয়ে বিচার বিশ্লেষণ চলছে। তারপরও হেফাজতের বিরুদ্ধে সরকারকে কিছু ইসলাম বিদ্বেষী বুদ্ধিজীবী উস্কে দিতে থাকে। হেফাজত কর্মসুচি অব্যাহত রেখে জানিয়ে দেয় তাদের এ কর্মসূচি অরাজনৈতিক। কাউকে ক্ষমতা থেকে সরানো বা কাউকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য এ আন্দোলন নয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে তাকে আলেম-ওলামাদের দাবি মেনে নেয়ার আহবান জানান। এ সময় সরকারের একটি অংশ হেফাজতে ইসলামকে ‘সাইজ’ করতে নানামুখী কৌশলের আশ্রয় নেয়। বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনকে হেফাজতে ইসলামের বিপক্ষে মাঠে নামানো হয়। সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও নেতা হেফাজতের সাংগঠনিক অবস্থাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে এদের পিছনে বিএনপি-জামায়াত কাজ করছে প্রচার করে পরিস্থিতিকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। টেলিভিশনের টক-শোর মাধ্যমে গড়িয়ে উঠা ২/৪ জন হঠাৎ বুদ্ধিজীবী হেফাজতকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে টিভি পর্দা গরম করেন। তারা সরকারকে উস্কে দেন হেফাজতের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের। কিন্তু কিছু বুদ্ধিজীবী চলমান বাস্তবতা অবলোকন করে টিভির টকশোতে যান এবং চলমান সংকট, মানুষের দুরবস্থা, সমাজে অস্থিরতা, সমাজ ব্যবস্থায় বিশৃংখলা, আগামী দিনের রাজনীতি ও গণতন্ত্র নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন। তারা সরকারকে সুপরামর্শ দেন। সংকটের অসংখ্য ফ্রন্ট খুলেছে সরকার। এতোগুলো বিষষেয়র মধ্যে নতুন করে হেফাজত ইস্যু ওপেনের আগেই অঙ্কুরেই সুরাহার পরামর্শ দেন সরকারকে। কিন্তু ইসলাম বিদ্বেষী কিছু বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, সমাজের উপর তলার সুবিধাভোগী ব্যক্তি, সরকারের থাকা বামপন্থী হেফাজত ইস্যুতে সরকারকে কঠোর হতে প্রভাবিত করে। কওমী মাদ্রাসা কেন্দ্রীক হেফাজতকে ‘ফুতকারে’ উড়িয়ে দেয়ার জন্য সরকারকে পরামর্শ দেন। যার পরিণতি বর্তমানের অবস্থা। গত কয়েকদিনে দেশের বিদেশে হেফাজত নিয়ে বেশি আলোচনা-সমালোচনা-বিতর্ক হচ্ছে। মতিঝিলের শাপলা চত্বরে বিজিবি-র‌্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযানের পর অনেক ইসলামী সংগঠন ও রাজনৈতিক দল হেফাজতের পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা আন্দোলনের কর্মসূচিও গ্রহণ করেছে। প্রখ্যাত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ হেফাজতের অবস্থা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের টকশোতে বলেছেন, গ্রাম বাংলায় কওমী মাদ্রাসা কেন্দ্রিক গড়ে ওঠা হেফাজতকে শহরের সুবিধাভোগীরা মনে করতাম পশ্চাতমুখী। তারা কিছুই জানেন না। কিন্তু সংগঠনটির নেতাদের কথাবার্তা, টেবিলটকে মনে হয় তারা অনেক কিছুই জানেন। তাদের এখন পশ্চাৎমুখী ভাবা ঠিক হবে না। তাদের চাহিদা, দাবী দাওয়া-চাওয়া পাওয়া নিয়েও ভাবতে হবে।  হেফাজত কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয়। ক্ষমতাও তাদের টার্গেট নয়। ১৩ দফা দাবিতে তারা যে আন্দোলন করছে সরকার সেগুলোর কিছু দাবি বাস্তবায়নও করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৩ মে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতের ১৩ দলা দাবির প্রতিটি বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। তিনি সরকারের অবস্থানও তুলে ধরেছেন। কিন্তু সরকারি দলের কয়েকজন সদস্য ও কয়েকজন মন্ত্রীর ‘অতিকথন’ পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে। তাদের এই ‘অতিকথন’ বন্ধ করতে হবে। আলেমদের সঙ্গে সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টি করতে এটা অপরিহার্য। গণতন্ত্রের জন্য যেমন প্রয়োজন বিরোধী দলের সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক ইস্যু নিয়ে আলোচনায় বসা। গাবের (খালেদা জিয়া) পানি আর ডাবের (শেখ হাসিনা) পানি এক সঙ্গে মিশতে পারে না। খালেদা জিয়ার মতো নেত্রীর সঙ্গে শেখ হাসিনার তুলনা চলে না। তাদের মধ্যে সংলাপও হতে পারে না। মন্ত্রীদের এধরনের দায়িত্বহীন কথাবার্তা সংকটকে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করছে। গতকালও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য দফতরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, ষড়যন্ত্র করে নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দেয়া যাবে না। একটি নির্বাচিত সরকারকে কয়েকটা মিছিল নিয়ে এলেই পতন ঘটানো যায় না। ক্ষমতা হস্তান্তর হবে নির্বাচনের মাধ্যমেই। বেগম খালেদা জিয়ার ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম আর হেফাজতের অবস্থানের মাধ্যমে তারা সরকারের পতন ঘটাতে চেয়েছিল। এতে সরকার বাধ্য হয়েছে তার প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে। তাই বিরোধী দল সরকার পতন ঘটাতে পারেনি। এভাবে নির্বাচিত সরকারের পতন ঘটানো যায় না। এই সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত রেলের কালো বিড়াল তাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে মন্ত্রী হয়ে নিজেই কালো বিড়াল হয়ে পড়েন। মধ্যরাতের অর্থ কেলেঙ্কারীর কারণে সরকারের ইমেজে চুনকালি পড়েছে। আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী সাবেক এই বামপন্থী নেতার কালো বিড়াল কাহিনীতে বিব্রত। অনৈতিকতার মাধ্যমে অর্থ আয় করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা খাওয়া এই মানুষটি প্রতিদিন জাতিকে জ্ঞানগর্ভ ছবক দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, খালেদা জিয়া পরিকল্পিতভাবে ৪ মে সমাবেশ ডেকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন। তার উদ্দেশ্য ছিল ৬ মে জামায়াত ও বিএনপিকে মাঠে নামিয়ে ঢাকাকে তছনছ করে সরকার ও গণতন্ত্রকে হত্যা করা। হেফাজতে ইসলাম ৫মে খালেদা জিয়ার নির্দেশে সারা শহরে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেছে। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তারা পরাজিত হয়েছে। বন ও পরিবেশ মন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে ফুলনদেবী হিসেবে অভিহিত করেছেন। দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরীর মতে এখনই জাতীয় ঐক্য ও সংলাপের দিশা জাগাতে না পারলে বিভক্তি আরও ভয়াবহ হবে। সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নাও হতে পারে। প্রচলিত নেতৃত্ব রাষ্ট্রনায়োকিত মনোভাব দেখাতে না পারায় সমাজে ঐক্যের স্থলে বিভেদ বৃদ্ধি পেয়েছে। সামাজিক চিন্তায় জাতীয়তাবাদী, বামপন্থী ও ইসলামপন্থীদের অবস্থান বিদ্যমান। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির প্রধান কর্তব্য হলো সকল সামাজিক শক্তি ও চিন্তাকে ওয়ার্কিং রিলেশন্সের মধ্যে এনে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ভিত্তিতে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। গণতান্ত্রিক সুশাসন বা গভর্নেন্সের প্রধান শর্তই হলো রাজনৈতিক সোসাইটি এবং সিভিল সোসাইটির মধ্যে ঐক্য। কিন্তু সিভিল সোসাইটি বিভক্ত হলে পলিটিক্যাল বা রাজনৈতিক সমাজও বিভক্ত হয়। তখন ঐক্য এবং সংলাপের জায়গাটি ছোট হয়ে আসে। বাংলাদেশে সমাজ ও সংস্কৃতির বিভক্তি রাজনীতিকেও বিভক্ত করেছে। এটা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন ব্যাপারী বলেন, দমন-পীড়ন, মামলা হামলা করে আন্দোলন ঠেকানো যায় না। সরকারকে যেতে হবে সমঝোতার পথে। তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে সরকারকে যেমন সমঝোতায় আসতে হবে; তেমনি হেফাজতের সঙ্গেও অর্থপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান করতে হবে। সরকারের আরো অনেক সমস্যা রয়েছে। সেগুলো সমাধানের প্রয়োজনেই সরকারকে আগে হেফাজত ইস্যুর সুরাহা করা জরুরী।

হাজার বছরের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ও জঘন্য গণহত্যাটা গতরাতে সম্পন্ন হল



*যখন হাজার বছরের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ও জঘন্য গণহত্যাটা গতরাতে সম্পন্ন হল, তখনও কিছু মানুষ রূপী জানোয়ার এই হত্যাকান্ডকে সমর্থন জানাচ্ছে। আমি এদের জন্মপরিচয়ের ব্যাপারে সমূহ সন্দেহ প্রকাশ করছি। আসলেই কি মানুষের শুক্রানুতে এদের জন্ম হয়েছে? নাকি জানোয়ারের?

এরা সিনেমা দেখে কাঁদে, শিকারীরা পাখি মারলে এদের চোখে পানি আসে, ডাকাতকে পিটিয়ে মারলে এদের মানবতা উথলে উঠে। কিন্তু রাতের অন্ধকারে নিরীহ মানুষগুলোর উপর বর্বর আক্রমন, সকালে ময়ল্বাহী ট্রাকে লাশ গুম করার দৃশ্য দেখেও ওরা উল্লাসে ফেটে পড়েছে।

হায়েনার চেয়েও কুৎসিত এদের হাসি, শুকরের চেয়েও জঘন্য এদের হিংস্রতা, ফেরাউন নমরুদের চেয়েও জঘন্য ওদের মন। আর কখনো যদি এরা মানবতার কথা বলে, পায়ের জুতা খুলে এদের গালে সীল মেরে দেওয়া হবে.........

জনগণের টাকায় কেনা বুলেট দিয়ে জনগণকেই নির্বিচারে গুলি করা হচ্ছে । আর সে জনগণ প্রতিবাদে লাঠি এবং রাস্তায় কুঁড়ে পাওয়া ইট দিয়ে তা প্রতিরোধ করতে গিয়ে গুলি তে মারা যাচ্ছে । এমন কি ৭১ সালের ২৫ মার্চের কালো রাতের অনুকরণে তাদের কে মারা হয়েছে । কি নির্মম , কষ্টকর সে দৃশ্য । অথচ , একদল চেতনাধারী এই নিরীহ মজলুমদের অপবাদ দিল এরা নাকি কুরান পুড়িয়েছে । যারা এই কুরানের অবমাননাকারীদের শাস্তির জন্য আজ রাস্তায় , তারা নাকি কুরান পুড়িয়েছে এই কথা একমাত্র অজ্ঞ রা-ই বলতে পারে , আর কেউ নয় ।

তাদের চোখে ধরা পড়েনা কুরান পোড়ানোর সময় ঐ জায়গায় ছাত্রলীগ ও পুলিশের শক্ত অবস্থান ছিল , যা দিবালোকের মত পরিস্কার যে এটা ষড়যন্ত্র ছিল । তাদের চোখে পড়ে না সারা দেশে গতকাল থেকে পুলিশ-ছাত্রলীগ মিলে এই পর্যন্ত কতজন নিরীহ হেফাজত ইসলামের কর্মীদের হত্যা করেছে । তাদের চোখে শুধু ধরা পড়ে মিথ্যার ভাণ্ডার ও বিশ্ব বেহায়া-নির্লজ্জ টিভি-মিডিয়া কি বলেছে সেটা ।

আমার তো মনে হয় বনের কোন পশু যদি স্বচক্ষে এই বর্বর হত্যাকাণ্ড দেখে তাহলে নীরবে ক্রন্দন করবে , কিন্তু তা এই কঠিন মনোভাবের মানুষগুলোর হৃদয়ে একটুও নাড়া দিবে না । আমরা দুয়া করি এই নামধারী মুসলিম গুলোকে আল্লাহ হেদায়েত দান করুন , যারা কবরের হিসাব বোঝার আগে দুনিয়ার হিসাব বুঝতে ব্যস্ত
!