BREAKING NEWS

মঙ্গলবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

নাস্তিক-মুরতাদ ব্লগারদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী



নাস্তিক-মুরতাদ ব্লগারদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী
রাসূলের (সা.)এর বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র ও কটূক্তি এদেশের মানুষ সহ্য করবে না

নিহত ব্লগার আহদ রাজীব হায়দার শুভ ওরফে থাবা বাবার ইসলাম বিরোধী জঘন্য অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের শীর্ষ আলেম ও সর্ববৃহৎ ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ ক্বওমী মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক) সভাপতি পীরে কামেল হযরত আল্লামা শাহ আহমদ শফী (দা.বা.)। বিবৃতিতে আল্লামা শাহ্ আহ্্মদ শফী বলেন, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন, আখেরী নবী হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.), পবিত্র কুরআন, ইসলাম ধর্ম ও ইসলামের রীতিনীতি নিয়ে ব্লগার রাজীব যেসব মিথ্যা, বানোয়াট, জঘন্য অশ্লীল ও উদ্ভট কল্পকাহিনী তার ব্লগে তুলে ধরে দীর্ঘ দিন থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট করার যে অপচেষ্টা চালিয়ে আসছিল, তার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। তার এই জঘন্য ও ঘৃন্য অপপ্রচারে আজ প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ে চরম আঘাত হেনেছে। ৯০ ভাগ মুসলমানের এই দেশে এত বড় দুঃসাহস এ পর্যন্ত আর কেউ কখনো করেনি। আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, পবিত্র ইসলাম ধর্ম ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব মুসলমানদের নয়নের মণি রাসূলের (সা.)এর বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র ও কটূক্তি এদেশের মানুষ সহ্য করবে না।
তিনি বলেন, ধর্মহীন শিক্ষানীতি প্রণীত হওয়ার ফলে নতুন প্রজন্ম ইসলামের ভাবাদর্শ থেকে ছিটকে পড়ে নৈতিক ও চারিত্রিক অধঃপতনের দিকে দ্রুত ধাবিত হয়ে পড়ছে। যার কুফল ইতিমধ্যেই আমরা অবলোকন করতে শুরু করেছি। দাড়ি-টুপীধারী ও ইসলামপন্থীদের উপর আক্রমণ এবং আধুনিক শিক্ষিতদের মধ্যে ইসলাম বিরোধী মনোভাব তৈরী হওয়া ছাড়াও দেশব্যাপী সুদ-ঘুষ, চুরি-ডাকাতি, খুনখারাবি, ধর্ষণ-ব্যভিচার বিরামহীনভাবে বেড়ে গিয়ে আদর্শ ও নৈতিকতার ধ্বস নামতে শুরু করেছে। আল্লামা আহমদ শফী উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, ৯০ ভাগ মুসলানের দেশে সরকার ইসলাম বিরোধী ব্লগার ও অপপ্রচারকারী নাস্তিকদের পৃষ্ঠপোষকতা কীভাবে করতে পারে? কীভাবে সরকারী মহল একজন স্বঘোষিত নাস্তিক ও ইসলামের বিরুদ্ধে জঘন্য কুৎসা রটনাকারীকে শহীদআখ্যায়িত করার প্রয়াস চালাতে পারে। বর্তমানে যুদ্ধপরাধীদের বিচারের দাবির আড়ালে এবং সরলমনা তরুণ সমাজের আবেগকে পূঁজিকরে নাস্তিক-মুরতাদসহ ইসলাম বিদ্বেষী একটি মহল মুসলমানদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছে। যা কোন অবস্থাতেই এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ সহ্য করবে না। তিনি দলমত নির্বিশেষে সকল ইসলাম প্রিয় মুসলমানদের প্রতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল এবং ইসলামের ইজ্জত রক্ষায় নাস্তিক-মুরতাদদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীসহ সকল ইসলাম বিরোধী অপতৎপরতার প্রতিবাদে শরীক হওয়ার আহ্বান জানান।
হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রবীণ মুহাদ্দিস আল্লামা হাফেজ শামসুল আলম বলেন, নিহত ব্লগার রাজিব সহ আরো কিছু নাস্তিক ইন্টারনেট মিডিয়ায় মহানবী মুহাম্মাদ (সা.)কে যে নোংরা ভাষায় আক্রমণ করে চলেছে, তাঁর জীবন সম্পর্কে এবং তাঁকে হেয় করে যে মিথ্যা কল্পকাহিনী রচনা করেছে, তাতে ঈমানদার প্রতিটি মুসলমানই চরম মর্মাহত হয়েছেন। মুসলমানদের প্রাণাধিক প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সা.) থেকে শুরু করে ইসলামের সকল বিধিবিধান, ধর্মীয় আচার, পবিত্রতার বিভিন্ন প্রসঙ্গ ব্লগার রাজীব ওয়াজরীতি অনুসরণ করে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করেছে। যৌনতাকে তার ব্লগে প্রধান আকর্ষণ হিসেবে হাজির করা হয়েছে। নূরানী চাপা সমগ্র ঘেঁটে দেখা গেছে, এমন কুরুচির মন্তব্যধর্মী লেখা ইসলামের দুশমনের পক্ষেও সম্ভব নয়। আর অনুসন্ধানে জানাগেছে, এ ধরণের ইসলাম বিদ্বেষী ব্লগাররাই শাহবাগের যুদ্ধাপরাধী বিরোধী আন্দোলনকে পরিচালনা করছে। এই আন্দোলনের আড়ালে যে দেশব্যাপী ইসলাম বিরোধী মনোভাব ছড়িয়ে দেওয়াই মুখ্য উদ্দেশ্য, এটা আর কারো কাছেই গোফন নেই। বর্তমান মহাজোট সরকারের আমলে এদেশে ইসলামের যে ক্ষতি হয়েছে, অতীতে আর দেখা যায়নি। রাসূলের বিরুদ্ধে এত জঘন্য অপপ্রচারের সাহস পশ্চিমা বিশ্বের ইসলাম বিদ্বেষীরাও দেখায়নি। অথচ ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশের জাতীয় সংসদে এই কুলাঙ্গারের জন্য শোক প্রস্তাব উত্থাপন হয়, এটা ভাবলেও গা শিউরে ওঠে। তিনি বলেন, রাসূল ও ইসলামী কৃষ্টিকালচারের এত জঘন্য অবমাননায় প্রতিবাদে শরীক না হয়ে কোন মুসলমানেরই নিশ্চুপ বসে থাকার পথ এখন আর খোলা নেই।
হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রখ্যাত মুহাদ্দিস এবং লেখক ও হাদীস গবেষক আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, ধর্ম কারো সম্পত্তি নয়। জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে আন্দোলন রাজনৈতিক বিষয়। কিন্তু কুলাঙ্গার রাজীব ইসলামকে আক্রমণ করে যেসব লেখা লিখেছে, তা পুরোটা পড়ার সাধ্যও কোন মুসলমানের নাই। এতটা কুৎসিত ও জঘন্য ভাষায় ইসলামের অবমাননা করার সাহস এ পর্যন্ত কেউ দেখায়নি। দেশে ধর্মনিরপেক্ষতা নতুন করে চালু হওয়ার পর থেকেই ইসলাম বিরোধীদের আস্ফালন লক্ষ্যনীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীর আড়ালে সারাদেশে অনাচার-ব্যভিচার ছড়িয়ে দেওয়ার অপতৎপরতা চলছে। সরলমনা জনসাধারণ প্রথমে বুঝতে না পারলেও এখন পরিষ্কার বুঝে গেছে যে, ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিকরা সরকারের ছত্রছায়ায় তরুণ সমাজের আবেগকে বিভ্রান্ত করে এক জঘন্য ইসলাম বিদ্বেষী ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তিনি তরুণ সমাজকে বিভ্রান্ত না হয়ে নাস্তিক-মুরতাদদের প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকারকে অবিলম্বে রাসূলের অবমাননাকারীদের কঠোর শাস্তিসহ সকল ইসলাম বিরোধী অপতৎরতা বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় ইসলামী নেতৃবৃন্দ তৌহিদী জনতাকে সাথে নিয়ে এর প্রতিরোধে কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন